পর্ণগ্রাফি থেকে মুক্তি: কোরআনের আলোকে একটি হৃদয়স্পর্শী কাহিনী!
আমান নামের এক তরুণ, বয়স পঁচিশ। শহরের একটি ছোট ফ্ল্যাটে থাকে। দিনের বেলা অফিস, রাতে ঘরে ফিরে একাকীত্ব। স্মার্টফোন তার সঙ্গী। কিন্তু এই সঙ্গী তাকে নিয়ে গিয়েছিল অন্ধকারের পথে। পর্ণগ্রাফির নেশায় জড়িয়ে পড়েছিল আমান। প্রতি রাতে ঘন্টার পর ঘন্টা ফোনের পর্দায় ডুবে থাকত। মনে অস্থিরতা, হৃদয়ে অপরাধবোধ। নামাজ পড়া ছেড়ে দিয়েছিল, কোরআনের পাতা খোলা হতো না।
একদিন অফিস থেকে ফেরার পথে আমানের চোখ পড়ল একটি মসজিদের সামনের ব্যানারে। লেখা: “কোরআনের আলোয় জীবন বদলানোর পথ।” কী যেন মনে হলো, সে মসজিদে ঢুকল। মাগরিবের নামাজের পর ইমাম সাহেব একটি আয়াত পড়লেন:
“যে ব্যক্তি আল্লাহর দিকে ফিরে আসে, আল্লাহ তার জন্য মুক্তির পথ খুলে দেন।”
(সূরা আশ-শারহ: ৮)
আমানের বুক কেঁপে উঠল। নামাজ শেষে ইমাম সাহেবের কাছে গিয়ে সে তার গোপন কষ্ট শেয়ার করল। ইমাম হাসলেন, বললেন, “আমান, শয়তান তোমাকে ফাঁদে ফেলেছে, কিন্তু আল্লাহর রহমত শয়তানের ফাঁদের চেয়ে
চেয়ে বড়। কোরআন তোমার হৃদয়ের আলো হবে।”
ইমাম সাহেব তাকে তিনটি পরামর্শ দিলেন:
১. তওবা করো: প্রতিদিন আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও। সূরা আন-নাস পড়ো, শয়তানের প্ররোচনা থেকে বাঁচতে।
২. চোখকে সংযত করো: কোরআনে বলা হয়েছে, “মুমিনদের বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে।”
(সূরা নূর: ৩০) ফোনের অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ মুছে ফেলো।
৩. কোরআনের সঙ্গী করো: প্রতিদিন একটি আয়াত পড়ো, তার তাফসীর শোনো। এটি তোমার মনকে শান্ত করবে।
আমান বাড়ি ফিরে ফোনের সব অশ্লীল কনটেন্ট মুছে দিল। রাতে সূরা আন-নাস পড়ে তওবা করল। পরদিন থেকে সে প্রতিদিন একটি আয়াত পড়তে শুরু করল।
সূরা আল-ইমরানের এই আয়াতটি তার হৃদয়ে গেঁথে গেল:”যারা ধৈর্য ধরে এবং সৎকর্ম করে, তাদের জন্য ক্ষমা ও মহাপুরস্কার রয়েছে।” (সূরা হুদ: ১১)
দিন যেতে লাগল। আমানের মন শান্ত হলো। নামাজে মনোযোগ বাড়ল। পর্ণগ্রাফির নেশা কমতে লাগল। এক রাতে সে ফোন হাতে নিয়েও কিছু দেখতে ইচ্ছে করল না। বদলে কোরআন তেলাওয়াত করল। তার চোখে পানি চলে এল। সে বুঝল, আল্লাহ তাকে মুক্তি দিয়েছেন।
আজ আমান মসজিদের একটি তরুণ দলের সঙ্গে কাজ করে। অন্যদের বলে, “কোরআন শুধু কিতাব নয়, এটি হৃদয়ের ওষুধ। তওবা করো, আল্লাহর কাছে ফিরে আসো। মুক্তি এখানেই।”
উপদেশ: পর্ণগ্রাফির নেশা থেকে মুক্তি পেতে কোরআনের সান্নিধ্য, নিয়মিত নামাজ, আর আল্লাহর কাছে তওবা ও কোন বুর্জুগের মাধ্যমে আত্মসুদ্ধি অপরিহার্য এবং সেই সাথে চোখ-মনকে সংযত করুন। আল্লাহর রহমত অসীম, তিনি কখনো বান্দাকে হতাশ করেন না।
#বিঃদ্রঃ- এই হৃদয়ছোঁয়া বাস্তবতা, সংগ্রামের প্রতিটি অধ্যায় এবং অটল আশার গল্প উঠে এসেছে
‘থট্স অব রাজ’ বইয়ে।
NouMuslim Muhammad Raj
মুহাম্মদ রাজ- রিভার্টেড মুসলিম