ঝিনাইদহে “ইত্যাদি” ধারণ, উপেক্ষিত জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা কাজল—সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সমালোচনার ঝড়
ঝিনাইদহের মহেশপুরের দত্তনগরে “ইত্যাদি” অনুষ্ঠানের ধারণ করতে এসে জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা কাজলের কোনো খোঁজ নেননি উপস্থাপক হানিফ সংকেত। বিষয়টি ঘিরে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে চলছে তীব্র সমালোচনা।
৮০ ও ৯০ দশকে কৌতুক অঙ্গনে এক জনপ্রিয় নাম ছিল কাজল। তার রচিত কৌতুকে যুক্ত হয়ে হানিফ সংকেতও একসময় ক্যাসেট, বই ও চলচ্চিত্রে একসাথে কাজ করেছেন। পরবর্তীতে “ইত্যাদি” শুরু হলে কাজল নিয়মিত কৌতুক শিল্পী হিসেবে যুক্ত ছিলেন, যাদের পরিশ্রমে গড়ে উঠেছিল এই জনপ্রিয় অনুষ্ঠান। তার সঙ্গে যুক্ত হন পাপ্পু, হারুন কিসিঞ্জার ও শাহীনও।
কিন্তু আজ সেই অবদান রাখা শিল্পীরা যেন বিস্মৃত। “ইত্যাদি” এখন আর আগের মতো জনপ্রিয় নয়, অনেকের মতে এর রসবোধ হারিয়ে গেছে।
সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেকেই বলছেন, ঝিনাইদহে অনুষ্ঠান ধারণ করতে গিয়ে কাজলকে আমন্ত্রণ না জানানো একটি দুঃখজনক সিদ্ধান্ত। এমনকি কাজলের সঙ্গেও “ইত্যাদি” টিমের কোনো যোগাযোগ হয়নি বলে জানা গেছে।
অনেকের মত, অতীতকে ভুলে গিয়ে বর্তমান প্রজন্মের কাছ থেকে এমন শিল্পীদের আড়াল করে রাখা কেবল বোকামিই নয়, সংস্কৃতির প্রতি অবিচারও।
ঝিনাইদহ জেলার সিনিয়র সাংস্কৃতিক শিল্পীরা বলেন ঝিনাইদহে “ইত্যাদি” ধারণে জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা কাজলকে উপেক্ষা করা নিঃসন্দেহে দুঃখজনক এবং সাংস্কৃতিক অঙ্গনের জন্য এক ধরনের বেদনার বিষয়। যিনি একসময় এই অনুষ্ঠান ও দেশের কৌতুকজগতের গৌরবময় অংশ ছিলেন, তাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা—এটা কেবল ব্যক্তিগত নয়, বরং প্রজন্মান্তরের অবদানকে অস্বীকার করার সামিল।
সাংস্কৃতিক কর্মীরা সঠিকভাবেই প্রশ্ন তুলছেন—যাদের ঘাম আর প্রতিভায় “ইত্যাদি” একসময় দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিল, তাদের প্রতি সম্মান না দেখানো একটি স্পষ্ট অবমূল্যায়ন। এতে হানিফ সংকেত ও প্রযোজনা টিমের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক।
সংস্কৃতি কোনো সময় নির্ভর প্রজেক্ট নয়—এটি ইতিহাস, অবদান ও শ্রদ্ধার ধারাবাহিকতা। সেই ধারাবাহিকতাকে রক্ষা করাই উচিত একজন সাংস্কৃতিক উদ্যোক্তার দায়িত্ব। কাজলসহ অন্য বরেণ্য শিল্পীদের অবদান ভুলে যাওয়া মানে আমাদের শেকড়কেই অস্বীকার করা।
এই ঘটনার আলোকে ভবিষ্যতে সাংস্কৃতিক আয়োজনগুলোতে অবদান রাখা প্রবীণদের যথাযথ সম্মান ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সময়ের দাবি।
