ঝিনাইদহে সরকারি হাসপাতাল হয়েছে আরএমও’র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান,শৈলকুপা হাসপাতালে ন্যায্য চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগী

শৈলকূপা প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ।

ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন,আরএমও,শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে উপজেলার সিংহভাগ মানুষের নানাবিধ অভিযোগ রয়েছে। 

তিনি শৈলকুপা হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) হিসেবে যোগদানের পর থেকে স্বাস্থ্য সেবার এ প্রতিষ্ঠানকে গড়ে তুলেছেন দূর্নীতির স্বর্গরাজ্যে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালে সেবা নিতে আসা একাধিক রোগী ও তার স্বজন এবং স্থানীয়রা জানায়, 

আরএমও ডা: আব্দুল্লাহ আল মামুন বেশিরভাগ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে কমিশন নিয়ে থাকেন। ফলে সামান্য অসুস্থ রোগীকেও ভয়ভীতি দেখিয়ে পছন্দসই ক্লিনিকে পাঠাতে বাধ্য করেন৷ হাসপাতালে সকল অপারেশন বন্ধ করে ক্লিনিক ব্যবসায়ীদের কাছে রোগী পাঠিয়ে সেখানে গিয়ে নিজেই অপারেশন করেন। 

বেশিরভাগ সময় নিজের কোয়ার্টারে রোগী দেখে ভিজিট নেন। হাসপাতালে ভর্তি রোগী দেখেও টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে ।  

হাসপাতালে অন্য কোন ডাক্তারকে রাউন্ডে যেতে তিনি  বাধা প্রদান করেন বলে জানা যায়। তিনি নিজে ক্লিনিক দালালদের সাথে নিয়ে রাউন্ডে যান। ক্লিনিকের কমিশন পেতে রোগীদের উপর চাপিয়ে দেন অপ্রয়োজনীয় অসংখ্য পরীক্ষা নিরীক্ষা। আরএমও’র বরাত দিয়ে দালালরা জোর করে রক্ত সংগ্রহ করে নিয়ে যায় ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। নামমাত্র পরীক্ষা নিরিক্ষা করে রোগীদের উপর চাপিয়ে দেয় বিলের বোঝা। 

শৈলকুপা হাসপাতাল এখন আরএমও’র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে বলেও অনেকে দাবী করেন।

অভিযোগ রয়েছে, প্রতিটি প্রেসক্রিপশনের উপরে টেস্টের মূল্য নির্ধারণ করে পাঠিয়ে দেন পছন্দসই ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। হাসপাতালে ভর্তি ও জরুরী বিভাগে আগত রোগী নিজের সরকারী চেম্বারে ডেকে নিয়ে ভিজিট নেয়ার অহরহ অভিযোগ তো রয়েছেই আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে। 

এছাড়াও তিনি হাসপাতালে একাই রাউন্ড দেবেন, অন্য কোন চিকিৎসক রাউন্ডে যেতে পারবে না। মনোনিত ক্লিনিক দালালদের সাথে নিয়ে রাউন্ডে গেলেই মেলে তার ভাগের টেস্টের কমিশন। 

অন্যদিকে বিভিন্ন নিন্মমানের ঔষধ কোম্পানির ঔষধ লেখে হাতিয়ে নেন মোটা অংকের টাকা। 

এছাড়াও অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। 

শৈলকুপা হাসপাতালের আরএমও তার কোয়ার্টারে ব্যক্তিগত চেম্বার খুলে ভিজিট নিয়ে রোগী দেখার কারনে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারন খেটে খাওয়া মানুষ। 

একজন বিশেষ ব্যক্তির নাম ভাঙ্গিয়ে চিকিৎসা বাণিজ্যে মেতেছেন বলে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। যদি কেউ মুখ খোলে তাহলে তাকে হামলা মামলার ভয় দেখানোসহ লালিত গুন্ডা বাহিনী দিয়ে হত্যার হুমকি পর্যন্ত দেয়া হয়। 

এমন শত শত অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। 

এ বিষয়ে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আরএমও ডাঃ আব্দুল্লাহ আল মামুনের বক্তব্য নিতে তার কোয়ার্টারে গেলে দেখা মেলে তার ব্যক্তিগত চেম্বারের। সেখানে সে শতশত রোগী নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে। এমতাবস্থায় সাংবাদিক দেখে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে যান। সাংবাদিকরা তার বক্তব্য নিতে গেলে তিনি উল্টো সাংবাদিকদেরই চাঁদাবাজ বলে ফাঁসানোর ব্যর্থ চেষ্টা করেন। 

এ বিষয়ে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রাশেদ আল মামুন বলেন, হাসপাতালে কর্মরত সকল ডাক্তারের রাউন্ড দেয়ার অধিকার রয়েছে। রাউন্ডের সময় বহিরাগত ও ক্লিনিক দালাল এবং ঔষদ কোম্পানির লোকজন সাথে থাকা অত্যন্ত দু:খজনক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *