ঝিনাইদহে মাফিয়া চক্রের হাত থেকে মেয়েকে ফিরে পাওয়ার দাবিতে অসহায় বাবার সংবাদ সম্মেলন
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
নিখোঁজ কন্যার ফিরে পাওয়ার দাবিতে ঝিনাইদহে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন এক হতভাগ্য পিতা ও তার পরিবার।
৩০ শে জুন ২০২৫ রোজ বুধবার বেলা বারোটার দিকে পাগলা কানাই মোড়ে ঝিনাইদহ প্রেস ইউনিটি কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন, চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার রায়পুর গ্রামের মোঃ আব্দুল আজিজ।
সাংবাদিক সম্মেলনে আব্দুল আজিজ বলেন, তিনি তার দ্বিতীয় কন্যাকে ৭ বছর আগে ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার একটি গ্রামে বিবাহ দেয়। বিবাহ পরবর্তী তাদের এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয় তার বর্তমান বয়স ৫ বছর।
তিনি বলেন আমার মেয়ে জোবাইদা’র সুখের সংসার। এই সংসারে লোলুপ দৃষ্টি পড়ে আমার নিজ গ্রামের বাড়ির পার্শবর্তী মৃত মল্লিক মন্ডলের ছেলে আসাদুলের।
আমার মেয়ে জোবাইদার সাথে বিবাহের পর প্রতারনার মাধ্যমে সম্পর্ক গড়ে তোলে সেটা আমরা জানতাম না। তখন মেয়ে শ্বশুর বাড়ি যেতে অনীহা প্রকাশ করতো প্রায়ই।
সেই থেকে আসাদুল ব্লাকমেইল করে হত্যা খুন জখমের হুমকি দিয়ে বিভিন্নস্থানে নিয়ে যায় এবং ভয় দেখায়, বলে তোর মা বাবা এবং একমাত্র ভাই তাকেও হত্যা করবো। তুই কাউকে বলতে পারবি না।মেয়ে ভয়ে কিছুই প্রকাশ করতো না।
আসাদুলের ভয়ে নিরুপায় হয়ে তার সাথে সংসার ছেড়ে উথলী গ্রামের শাহীন ড্রাইভারের নিকট আমার মেয়েকে চক্রান্ত করে নিয়ে যায়। সেখানে শাহীন ড্রাইভার জীবননগর উপজেলার মেদিনীপুর গ্রামের রাজ্জাকের ছেলে হাকিমের নিকট নিয়ে যায়।
হাকিমের নিজ বাড়িতে শাহীন আমার মেয়ে জোবাইদার সাথে বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয। মেদিনীপুরের হাকিম তার রমরমা মাদকের ব্যবসায় আমার সহজসরল মেয়েকে দিয়ে গত ৪ মাস পূর্বে একটি ব্যাগে গাঁজা দিয়ে জীবননগর থেকে বাস যোগে তাদের গন্তব্যে পাঠিয়ে দেয়।
এরপর গাঁজা সহ আমার সহজ সরল মেয়ে পুলিশের কাছে ধরা পড়ে জেল হাজতে যায়।
মহেশপুর থানা পুলিশ আমাদের বাসায় জোবাইদা গাঁজা সহ ধরা পড়েছে জানান, তারপর সেখানে আমরা দেখতে যায়। মাদকবিক্রেতা চক্র আসাদুল শাহীন হাকিম আমার মেয়ের সাথে জেল খানায় দেখা করে কোন কিছু না জানানোর জন্য বলে।
জোবাইদাকে জেল হাজত থেকে তারা বের করে পূনরায় তাদের অপরাধ জগতে নিয়ে যাবে বলে জানান আমার মেয়ে। আমি জেল হাজতে দেখা করতে গেলে জানান আপনারা দেখতে পারবেন না ১৫ দিন না হলে। ১৫ দিন পূর্ণ হলে জোবাইদার নিকট জানতে পারি মাদকচক্র তাকে জামিনের ব্যবস্হা করছে।
মেয়ের নিকট জানতে পেরে মহামান্য হাইকোর্টের মাধ্যমে জরুরী জামিনের ব্যবস্হা করি।
জামিন করে আমারা রায়পুর গ্রামে থাকা অবস্থায় আসাদুল বিভিন্ন মাধ্যমে জোবাইদার সাথে সম্পর্ক করতে থাকে জানতে পেরে নিজ বাড়ি বিক্রি করে আসাদুলের লোলুপ দৃষ্টির বাহিরে জীবননগর শহরে চলে যায় মেয়ে জোবাইদাকে নিয়ে।
সেখানে যাওয়ার ১৫ দিনের মাথায় জোবাইদার সাথে যোগাযোগ করে আসাদুল পাচারের উদ্দেশ্যে মহেশপুর উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী আনন্দ বাজার নামক গ্রামে নিয়ে যায়।
সেখানে রাসেল নামে একজন ঢাকার গাড়ির সুপারভাইজার তাকে মাঠ থেকে উদ্ধার করে।
রাসেল জানান ৯৩ নম্বর মোবাইল নম্বর তার মামা পরিচয় দিয়ে তাকে এই মাদক ও দেহব্যবসা সহ পাচারের জন্য ভারত পাঠাচ্ছিল,আমি তাকে ধরে নিয়ে এসে রাতে আমার এক চাচির বাড়িতে রেখে আসি। তারপর তাকে অনেক বুঝিয়ে তার বাড়ির উদ্দেশ্যে আনন্দ বাজার থেকে গাড়িতে উঠিয়ে দেয়। এই আসাদুল আমার মেয়ের সম্পর্কে প্রতিবেশী মামা হওয়া সত্বেও তার লালসার বলি হয়েছে।
আমার মেয়ে জোবাইদাকে এই মাদকচক্র আসাদুল, শাহীন, হাকিম বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে শেষ পর্যন্ত তার পরিবারের থেকে বিচ্ছিন্ন করে ভারত পাচারের উদ্দেশ্য গুপ্ত করে আটকে রেখেছে।
আমি আমার মেয়ে জোবাইদা ফিরে পেতে চাই, আপনার নিকট নিবেদন জানাচ্ছি এই মাদককারবারী আসাদুল শাহীন হাকিম এর বিচার সহ আমার সহজ সরল মেয়ের সংসার জীবনে পাঁচ বছরের নাবালক শিশুর মা জননী হয়ে ফিরিয়ে দেয়।
এই মাদককারবারী আসাদুল শাহীন হাকিম এর বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
ইতিমধ্যে আদালতে একটি মামলা দায়রের করেছি, আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানো জারি করেছে। যার নারী শিশু আদালতের মামলা নং:-
পিটিশন ৫৪/২০২৫।
